৪ থেকে ২৫ অক্টোবর সারাদেশে ইলিশ ধরা বন্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় :
৩০-০৯-২০২৫ ১২:০৩:০১ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
৩০-০৯-২০২৫ ১২:০৩:০১ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ মাছ রক্ষায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে সরকার। এ সময়ে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সোমবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে 'মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫' এবং সারা দেশে ইলিশের প্রাপ্যতা, মূল্য ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরিপক্ক যাতে নিরাপদে ডিম দিতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রি ও বিনিময় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, ইলিশের স্থায়িত্বশীল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মৎস্য সংরক্ষণ আইন-১৯৫০ এর অধীনে প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেজশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫ এর রুল ১৩ অনুযায়ী পরিপক্ক ইলিশ যাতে নিরাপদে ডিম দিতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য, সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রি ও বিনিময় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তর ঘোষণা করেছে, ২০১৫ সালের ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ১৯ আশ্বিন থেকে ৯ কার্তিক ১৪৩২ (৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর, ২০২৫) পর্যন্ত মা ইলিশ রক্ষায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। আশ্বিনী পূর্ণিমার আগের ৪ দিন এবং অমাবস্যার পরের ৩ দিনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ২২ দিন এ অভিযান চলবে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিএফআরআই) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা, বিশেষ করে মৎস্যজীবীদের মতামত অনুযায়ী এ সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রজনন মৌসুমের পূর্ণিমা ও অমাবস্যা উভয় সময়ই ডিম পাড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, দুটি পর্যায় অন্তর্ভুক্ত করে সর্বোচ্চ প্রজনন নিশ্চিত করা হয়েছে।
এ কর্মসূচি 'মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিমান ২০২৫' নামে পরিচিত। এ সময় নদীতে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিক্রি, মজুদ ও বিনিময় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। অভিযান পরিচালনায় মৎস্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহি-নীসহ সব আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অংশগ্রহণ করবে। উদ্যোগের অংশ হিসেবে, ৩৭টি ফেলার ১৬৫টি উপজেলার ৬ লাখ ২০ হাজার ১৪০ জেলে পরিবারকে ভিজিএফ (চাল) দেওয়া হবে, পরিবার প্রতি বরাদ্দ থাকবে ২৫ কেজি করে চাল, যা পুরো কার্যক্রমে মোট ১৫ হাজার ৫০৩ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন চাল প্রয়োজন হবে।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, এ অভিযানের সময় জলসীমার বাইরে মাছ ধরা ট্রলারের অনুপ্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। নদীতে এ সময় ড্রেজিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হবে। একইসঙ্গে সমুদ্র, উপকূল ও মোহনায়ও প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন ধরে ইলিশ আহরণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। গতবছর ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিনের অভিযানে ১ হাজার ১৬৯টি মোবাইল কোর্ট ও ৯ হাজার ৮১৩টি অভিযানের মাধ্যমে ৭৫ দশমিক ২৭ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর গবেষণা অনুযায়ী, ২০১৪ সালের নিষেধাজ্ঞার ফলে ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। এর ফলে ৪৪ দশমিক ২৫ হাজার কোটি জাটকা/রেণু ইলিশ পরিবারে যুক্ত হয়েছে। এ ডিম থেকে উৎপন্ন রেণু বা পোনা (জাটকা) ভবিষ্যতে পরিপক্ক ইলিশে পরিণত হবে। আমরা আশা করছি, ২০২৫ সালের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান আগের বছরের তুলনায় আরও কার্যকরভাবে পরিচালিত হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Daily Sonali Rajshahi
কমেন্ট বক্স